একদিনের দেখায় প্রেম
আমি এক সাধারণ
ছেলে । কারো অনুরোধকে না বলাটা আমার দ্বারা খুব একটা হয়ে ওঠে না । আজ সকালটা ঘুম ভাঙলো
পাশের বাসার এক বৌদিমনির ডাকে । আজ সকাল সকাল কোন কাজ এসে দরজায় কড়া নাড়ছে বুঝতে আর
বাকি থাকলো না ।
ঘুম জড়ানো
চোখে বাইরে যেতেই আমার প্রিয় গুলুগুলু ছোট্ট সোনামনি রিংকি এসে কাকু কাকু বলে জড়িয়ে
ধরলো । রিংকির বয়স মাত্র তিন বছর কিন্তু আজকালকার
বাচ্চা । এতটা পাঁকা বাচ্চা আমাদের বাড়ির আসে পাশে খুব কম আছে। আর হয়তো সেকারণে হয়তো
এতা ভালো লাগে সোনামনিটাকে । আমার সাথে সোনামনির খুব ভাব ।
আমি জানতে
চাওয়ার আগেই রিংকি আদো আদো সুরে বলে উঠল কাকু কাকু আমকে নিয়ে ঘুরতে চলো । মা বলেছে
আজ তোমার কলেজ নাই । আমি না করতে পারলাম না আবার কিছু কাজ ছিল । আর পকেট খুব একটা সাড়া
দিচ্ছিল না ।
বৌদিমনির
অনুরোধ আর রিংকির জোরা জুরিতে রাজি হতেই হলো । বৌদি হয়তো বিষয়টা বুঝতে পারছিলেন তাই
দাদার কাছ থেকে দু’হাজার টাকা এনে দিয়ে বললেন মনি যা কিছু চাই আমি যেন তাকে কিনে দেই
। ঠিক আছে বললাম এবার দেখি বৌদির নিজের ব্যাগ থেকে আমকে আরো পাঁচশত টাকা দিলেন। আর বললেন এটা তোমার গাড়িতে তেল ভরার জন্য । আমি
তো মনে মনে খুব খশি । মোটমুটি এক সপ্তাহ আর গাড়ির তেল ভরার চিন্তা থাকলো না ।
আনন্দেতে
বাড়ি থেকে না খেয়ে রিংকিকে বাইকে নিয়ে বেরিয়ে এলাম । পাম্পে গিয়ে বাইকে তেল ভরছি দেখি
পেছন থেকে স্কুটি এসে বাইকে মেরে দিয়েছে । কিন্তু ভাগ্যিস রিংকি মনাটা আমার, নিচে দাড়িয়ে আসিক্রিম খাচ্ছিলো । নইলে তো ।
আমি তো রেগে
গেলাম সকাল সকাল না খাওয়া পেট আবার এই ঝামেলা
। আমার বাইকের তেমন কিছু হইনি । দেখি এক মেয়ে স্কুটি থেকে নেমে এস সরি বলছে । আমার
রাগ দেখানোর সময় দিলো না । ওমা এতো দেখছি দিবা স্বপ্ন দেখছি । যেন একদম কারিনা কাপুর
3 Idiot সিনেমার মতো সামনে এলো আর হেলমেট খুললো আমি আর আমিতে নাই । আমি নিজেকে আমির
খান ভাবতেছি । তাকে তো দেখেয় আমি ফিদা । কিছু বলাই হলো না । বললাম যদি বাচ্চাটা গাড়িতে থাকতো ? একটু ব্রেক করতে
পারলেন না ।
তিনি আবার
সরি বলে বললেন, দেখেন গাড়ি চালানো নতুন শিখেছি । তাই আরকি বলেই রিংকিকে কোলে তুলে চুমু
খেলো । রিংকিও মজে গেল । আমার দিকে তাকাচ্ছে , আইসক্রিম খাচ্ছে আর দু’জনে খোশ গল্প
করছে । আমি রিংকিকে ডাকতেই সে বলল আমি তোমার বাইকে যাবোনা । আমি কাকি মনির বাইকে যাবো
। আরে বাপরে । কোন কাকার বৌ আবার এটা ? রিংকি বলল
কেন তোমার । আমি তো হা আর ঐ মেয়েটি হা হা হা । বলল এটাই আমার কাকিমা । মেয়েটা
ভাবছে হয়তো বাচ্চাটা সহজ সরল আমি তার ভুলটা ভেঙে বলে দিলাম রিংকি খুব দুষ্টু তার কথাতে
কিন্তু কিছু মনে করেন না ।
না না আমি
কিছু মনে করিনি । আর মনে করার কি আছে । রিংকিকে বোঝালাম কিন্তু খুব জেদ ধরল না পেরে
বললাম দেখুন একটু যদি সাবধানে বাচ্চাটাকে অল্প একটু এগিয়ে দিতেন । এর মধ্যে রিংকি
বলল না না না আমি বড় কাকিমনিকে বাড়ি নিয়ে যাবো । অমি লজ্জায় পড়ে গেলাম । মেয়েটা অবশ্য
অতোটা ছেড়ে যেতে চাইছে না । তো বেশ চলুন একা ঘুরতে বের হয়ে ছিলাম একজন সঙ্গী পেলাম
কি তাইতো ? আমি উপায় না দেখে রাজি হলাম, রাজি তাকে করাবো কি আমি রাজি হলাম । সারাদিন
ঘুরলাম তাকে নিয়ে আর আমার ভাতিজি সারাদিন তার স্কুটিতে ।
আমার গাড়িটা
একাই চালালাম । দুপুরে লানচ বিল আর সব বিল দিয়ে বৌদির দেয়া টাকাতো গেলোই আমার টাকাও
প্রায় শেষ । শেষমেষ তাকে বাড়ি পর্যন্ত নিয়ে আসলো রিংকি আর মোটামুটি সবাইকে যা সারাদিন
করেছে আর নতুন গেষ্টকে যে নামে ডেকেছে সব বলে আমার মান সন্মান সব দিলো পানি পানি করে
।
আমি আর কিছু
বলার সুযোগ পেলাম না । সবাইকে বিদায় জানিয়ে
পরী বিদায় নিলো । সব জানা হলো কিন্তু ফোন, ফেসবুক বা ঠিকানা কিছুই জানা হয়নি । কেনইবা
শুনবো আর সে কেনইবা বলবে ? চলে তো গেলো কিন্তু লাইফ-টাইম পেইন দিয়ে গেল ।
আর সেদিন
থেকে দিনরাত রিংকির একই বায়না কাকিমনি চাই কাকিমনি চাই । অন্য কেউ না ঐ কাকিমনিটাই
চাই ।
সাধারণ ছেলেটা
আজ পাড়ার বিয়ের আগে বিধবা হলাম আর কি করা । রিংকির বয়স এখন পাঁচ তার জন্মদিনের গিফট
দিলাম কিন্তু তার মুখে দুষ্টু হাসিতে কিছু একটা লুকিয়ে ছিলো । বুঝে ওঠার আগেই দেখি
পেছনে সেই ডানা কাটা পরী ।
আর তারপর
থেকে চলতে থাকলো আমাদের কাহিনী । আর রিংকি তো যেন চাঁদ হাতে পেয়েছে এতো খুশি ।
আগে রাগ হতো
রিংকির উপর এখন কিন্তু রিংকি ছাড়া আমার চলেই না । রিংকি আমার বাড়ির বাইরে তার সাথে
দেখা করার একমাত্র ট্রামকার্ড ।
সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত : সুব্রত সরকার
সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত : সুব্রত সরকার
Comments
Post a Comment